
জাহিদ হাসান, নওগাঁ প্রতিনিধি:
দেশ, ভাষা, সংস্কৃতি—সবই ভিন্ন। তবুও ভালোবাসা কখনও সীমারেখায় থেমে থাকে না। এমনই এক গল্পের নায়ক-নায়িকা নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রবিউল ইসলাম ও পাকিস্তানি তরুণী ফাইজাআমজাদ। রাশিয়ায় পরিচয়, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, আর সেই প্রেমের টানে ফাইজাআমজাদ পাড়ি জমিয়েছেন সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের বহলা গ্রামের আব্দুল মন্ডলের ছেলে রবিউল ইসলাম জীবিকার তাগিদে রাশিয়ায় যান। সেখানে পড়াশোনা করছিলেন পাকিস্তানের লাহোরের মেয়ে ফাইজাআমজাদ। সেই সূত্রে দুজনের পরিচয় এবং ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্রেম। দীর্ঘদিনের সেই সম্পর্কের পর গত ২২ আগস্ট পাকিস্তানে পারিবারিক সম্মতিতেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর সম্প্রতি ফাইজাআমজাদ বাংলাদেশে আসেন। রবিউলের গ্রামের বাড়িতে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভিনদেশি নববধূকে একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের মানুষ।
রবিউল ইসলাম বলেন, “রাশিয়ায় কাজ করার সময় ২০২৩ সালে ফাইজার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আমরা দুজন একে অপরকে ভালোবাসি। পরে পরিবারের সম্মতিতে পাকিস্তানে আমাদের বিয়ে হয়।”
ফাইজাআমজাদ বলেন, “আমি রবিউলকে অনেক ভালোবাসি। বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে। সবাই আমাকে মেয়ের মতো গ্রহণ করেছে। আমি এখানে থেকেই নাগরিকত্ব নিয়ে চিকিৎসা পেশায় কাজ করতে চাই।”
রবিউলের মা বলেন, “বউমা খুব ভালো। বাড়িতে আসার পর থেকেই সবাইকে সাহায্য করছে। তাকে দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে। সবাই বলছে, ছেলের বউ অনেক মিষ্টি স্বভাবের।”
ইউপি চেয়ারম্যান এস. এম. মামুনুর রশিদ জানান, “রবিউল ও ফাইজাআমজাদ ইউনিয়ন পরিষদে এসেছিল। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, পারিবারিক সম্মতিতেই তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।”
এদিকে আগে টেলিভিশন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদেশি মেয়েদের বাঙালি ছেলের প্রেমে বাংলাদেশে চলে আসার খবর দেখা গেলেও, এবার নিজের চোখে এমন ঘটনা দেখে অভিভূত স্থানীয়রা।
ভালোবাসা যে সীমান্ত মানে না—রবিউল ও ফাইজাআমজাদ তারই এক জীবন্ত প্রমাণ।

Reporter Name 





















